পরমাণুর ইলেকট্রনগুলোর শক্তির কতগুলো সুনির্দিষ্ট মান থাকতে পারে, এই মানগুলোকে পরমাণুর শক্তিস্তর বলা হয়। কোনো নির্দিষ্ট মৌলের সকল পরমাণুর শক্তিস্তরের একই রকম সেট থাকে। এটিই ঐ মৌলের বৈশিষ্ট্য। এর অর্থ হলো, অন্যান্য মৌলের জন্য শক্তিস্তরের এই সেট পৃথক। কোনো পরমাণুর বিভিন্ন শক্তিস্তরের শক্তি তরঙ্গ বলবিদ্যা ব্যবহার করে বের করা যায়। হাইড্রোজেন পরমাণুর বেলায় বোর মডেল ব্যবহার করে এই শক্তি স্তরের শক্তি বের করা যায়।
পরমাণুর শক্তি স্তরকে চিত্রে অনুভূমিক রেখায় অনুক্রম দ্বারা নির্দেশ করা হয়। চিত্র ১৯-৫-এ হাইড্রোজেন পরমাণুর শক্তিস্তরের চিত্র দেখানো হয়েছে। হাইড্রোজেনের শুধু একটি ইলেকট্রন থাকে যা সাধারণত সর্বনিম্ন শক্তিস্তর দখল করে থাকে। এই স্তরের শক্তির মান হলো - 13.6 eV। ইলেট্রনটি যখন এই শক্তি স্তরে থাকে তখন পরমাণু ভূমি অবস্থায় রয়েছে বলা হয়। কোনো পরমাণু যদি কোনো না কোনোভাবে শক্তি শোষণ করে অন্য কোনো পরমাণুর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে অথবা তড়িতচৌম্বক বিকিরণ শোষণ করে যদি উত্তপ্ত হয় তাহলে ইলেকট্রনটি একটি উচ্চ শক্তিস্তরে উঠে যেতে পারে। এতে পরমাণুটি অস্থিতিশীল হয়। এ অবস্থাকে বলা হয় উত্তেজিত অবস্থা, কিছুক্ষণ পরে অক্রম সময় ব্যবধানে ইলেকট্রন শক্তির নিম্নতম স্তরে নেমে আসে অর্থাৎ পরমাণুটি ভূমি অবস্থায় ফিরে আসে । ইলেট্রন যে শক্তি শোষণ করছিল তা তড়িতচৌম্বক বিকিরণরূপে নির্গত হয়ে যায় ।
প্রতিটি শক্তিস্তরকে কোয়ান্টাম সংখ্যা দ্বারা বৈশিষ্ট্যায়িত করা হয়। সর্বনিম্ন শক্তিস্তরের জন্য n = 1, পরবর্তী স্তরের জন্য n = 2 ইত্যাদি, n = (অসীম) স্তরের জন্য শক্তির মান শূন্য। কোনো ইলেকট্রন উত্তেজিত হয়ে এই স্তরে উঠলে এটি আর পরমাণুতে আবদ্ধ থাকে না, পরমাণু থেকে মুক্ত হয়ে যায়। কোনো পরমাণু একটি ইলেকট্রন হারালে তা আয়নিত হয়ে যায়, ভূমি অবস্থা থেকে কোনো হাইড্রোজেন পরমাণুকে আয়নিত করতে 13.6ev শক্তির প্রয়োজন হয়।
আরও দেখুন...